মায়ের কোলে ফিরতে চান সফিকুল
॥রাকিবুল ইসলাম॥
নাম তার মোঃ সফিকুল ইসলাম। নামটি কে রেখেছে তা সে নিজেই জানেনা। কে তার পিতা-মাতা, কারা তার আত্মীয়-স্বজন? কিছুই সে বলতে পারে না। হ্যা সময় টা আনুমানিক ১৯৮২/৮৩ ইং সালের ঘটনা। রাজবাড়ী জেলার কালুখালী রেলওয়ে জংশনে একটি ৬/৭ বছরের একটি শিশু নিরবে কেঁদে যাচ্ছে। কেউ তার পরিচয় জানেনা। সে নিজেও বলতে পারে না। তখন কেউ শিশুটির দায়িত্ব নিতে চায় নি। নিয়েছেন চিত্ত সাহা নামক এক ব্যক্তি। তার কালুখালী রেলওয়ে স্টেশন বাজারে একটি খাবারের হোটেল ছিল। সে শিশু বাচ্চাটিকে হোটেলের কাজে রেখে দেয় এবং ভাবে বাচ্চাটির কোনো অভিভাবক সন্ধান করতে এলে তাকে দিয়ে দিবেন। এভাবে দিন মাস শেষে ৫/৬ বছর চলে যায় কেউ তার সন্ধানে আসে না। শিশুটি আস্তে আস্তে বড় হয়।
বিভিন্ন মানুষের কাছে তার হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা শুনতে পায়। পরে হোটেলের কাজটি ছেড়ে দিয়ে নিজের পায়ে দাড়াতে বেছে নেয় ছোট একটি ব্যবসা। সেটি ২/৩ বছর শেষে চলে যায় কুষ্টিয়া জেলা শহরে। সেখানে গিয়ে নতুন ব্যবসা শুরু করে। মাঝে মাঝে কালুখালীতে আসে তার প্রিয় মানুষগুলোর সাথে দেখা করতে। এভাবে এক সময় সে রাজধানী ঢাকায় চলে আসে। ঢাকাতে এসে রিক্সা চালিয়ে জীবনযাপন করে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পেশার কাজ করে থাকেন।
পরে চাপাইনবাবগঞ্জের সুফিয়া নামের একটি মেয়ের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার জীবন শুরু করে। বর্তমানে ২ পুত্র সন্তান ও ১ কন্যা সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে দিন যাপন করছে। কিন্তু এরই মাঝে হঠাৎ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। ভাবেন পৃথিবীতে এত মানুষ কিন্তু আমার বাবা-মা কোথায়। আমি তাদের দেখতে চাই। মায়ের কোলে মাথা রেখে হারিয়ে যাওয়ার সকল কষ্ট দূর করতে চাই। সে ফিরে পেতে চায় তার আত্মীয়-স্বজনদের।
সফিকুল এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমি ছোট বেলায় রাজবাড়ী জেলার কালুখালী জংশন রেলস্টেশনে হারিয়ে যাই। তারপর থেকে আর কেউ আমাকে খুঁজতে আসে নি। আমার বাবা-মা জানেও না আমি এখন কোথায় আছি? কত বড় হয়েছি। আমি আমার কোলে ফিরতে চাই। বাবা-মাকে দেখতে চাই। তারা যদি জীবিত নাও থাকে তাদের কবর টুকু অন্তত দেখতে চাই। আমি আমার স্বজনদের ফিরে পেতে চাই।
এরকম কোনো শিশু হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা রাজবাড়ী জেলার কালুখালী জংশন রেলওয়ে স্টেশনে ঘটে থাকে তাহলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা গেল। মোবাইল- রাকিব-০১৭৪৪৭২৭৯১০।