Newsun24

Most Popular Newsportal

রাজনীতি রাজবাড়ী

রাজবাড়ী জেলার প্রথম মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন জিল্লুল হাকিম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মত পূর্ণ মন্ত্রী পেলো রাজবাড়ী জেলাবাসী। জেলার (পাংশা- বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজবাড়ী-২ আসন। এর আগে এই আসন থেকে কোনো সংসদ সদস্য মন্ত্রী হননি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থ বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। নতুন মন্ত্রী পরিষদে প্রথম বারের মত নিয়োগ পেয়েছেন রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম। তিনি রাজবাড়ী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম দৈনিক আমার সংবাদ কে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সন্ধ্যার পরে আমাকে ফোন করে বৃহস্পতিবার মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য জানিয়েছিলেন।

মন্ত্রীসভার তালিকার নাম থাকায় আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হয়ে কাজ করার পরিধি আরো বিস্তৃত হলো। এ মর্যাদা পাওয়ায় রাজবাড়ী জেলা বাসি ও রাজবাড়ী-২ আসনের মানুষের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম ১৯৫৪ সালের ২ জানুয়ারী এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর (এম.এ) পাশ করেন । তার পিতা মোঃ আবুল হোসেন ছিলেন একজন সমাজসেবক এবং শিক্ষানুরাগী। জিল্লুল হাকিম এর পৈতৃক বাড়ি পাংশা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মোঃ জিল্লুল হাকিম মুক্তিযুদ্ধকালীন গোয়ালন্দ মহকুমার কমান্ডার হিসেবে পাকিস্তানী সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। তার স্ত্রী সাঈদা হাকিম ও দুই ছেলে আশিক মাহমুদ মিতুল ও আসিফ মাহমুদ রাতুল সফল ব্যবসায়ী এবং একমাত্র কন্যা চিকিৎসক।

তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মোট ৬ বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯৬ সালে প্রথম নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরের বার ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নাসিরুল হক সাবুর কাছে হেরে যান। পরবর্তী ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নাসিরুল হক সাবুকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০১৪ সাল এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি ০৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৪ শত ১৮ ভোটের ব্যাধানে বিশাল বিজয় অর্জন করেন। এ নির্বাচনে তিনি ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৮৪ ভোট পান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম সংসদ সদস্যের পাশাপাশি রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সর্বশেষ তিনি ২০২১ সালের ১৬ই অক্টোবর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ৩বারের মতো রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

ইতিপ‚র্বে ২০১৮ সালে দশম জাতীয় সংসদের শেষ সময়ে রাজবাড়ী-১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ কাজী কেরামত আলী শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ১বছর এবং তার পূর্বে বিএনপির সরকারের আমলে অধ্যাপিকা জাহানারা বেগম সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারী) সন্ধ্যা  সোয়া ৭টার দিকে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন প্রথমে ২৫ জন মন্ত্রী ও পরে ১১ জন প্রতিমন্ত্রীকে শপথবাক্য পাঠ করান। সাংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের ২ ধারা অনুযায়ী মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা এ শপথ নেন।

প্রথমে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পরে গোপনীয়তার শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো শপথ নিলেন। এর মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠিত হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে।

শপথ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। অনুষ্ঠানে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত আছেন।এর আগে গতকাল বুধবার (১০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের তালিকা প্রকাশ করেন। এখন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নিয়োগ পাওয়া মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীসহ শপথ নেওয়া ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভাই দেশের নতুন সরকার। নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার পর আগের মন্ত্রিসভা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে গেছে।

এর আগে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনের ফলাফল পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল–জাসদ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় পেয়েছে।

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!