Newsun24

Most Popular Newsportal

খেলাধুলা

নারী বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম জয়

পাকিস্তানকে হারিয়ে আইসিসি নারী বিশ্বকাপের প্রথম জয় পেয়েছে বাংলাদেশের নারীরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ রানে জিতেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।

সোমবার (১৪ মার্চ) হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে সাত উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান করে বাংলাদেশ।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান বেশি রান করতে পারেনি। ২২৫ রানেই অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তানের মেয়েরা। এর ফলে ৯ রানে জিতে বিশ্বকাপে জয়ের খাতা খুললো বাংলাদেশের মেয়েরা।

বাংলাদেশের জয়ে অবদান কয়েকজনের। ব্যাট হাতে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭১ রান করেন ফারজানা, নিগার করেন ৪৬ রান, সুপ্তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। লেগ স্পিনের ঝলকে ম্যাচ ঘুরিয়ে সেরা হওয়া ফাহিমা ৩৮ রানে নেন ৩ উইকেট, ২৯ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন আরেক লেগি রুমানা।

এক পর্যায়ে ম্যাচ জিততে শেষ চার ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৩০ রান। ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলা বিসমাহ মারুফের দলের ভরসা তখন সেঞ্চুরিয়ান সিদ্রা। সালমা খাতুনের ৪৭তম ওভারে আসে আরেক সাফল্য। ডিয়ানা বাগকে এলবিডব্লিউ করে ফিরিয়ে দেন সালমা। ওই ওভার থেকে আসে কেবল ৫ রান।

নাহিদা আক্তারের ৪৮তম ওভারে ম্যাচ একদম মুঠোয় নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। দুই রান নিতে গিয়ে কাটা পড়েন ১০৪ রান করা সিদ্রা। আসে কেবল ৬ রান। সেই দুই ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ১৯ রানের। যা পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটারের পক্ষে নেয়া সম্ভব ছিলো না।

২৩৫ রান তাড়ায় বাংলাদেশকে ঘাবড়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার। নাহিদা খান-সিদ্রা আমিন মিলে ওপেনিং জুটিতেই এগুচ্ছিলেন শতরানে দিকে।

তবে ২৪তম ওভারে তাদের ৯১ রানের জুটি আলগা করতে পারেন লেগ স্পিনার রুমানা আহমেদ। ৪৩ করা নাহিদাকে বোল্ড করে দেন তিনি। এই সময় আঁটসাঁট বল করে পাকিস্তানিদের উপর চাপ বাড়ায় বাংলাদেশের মেয়েরা। রানরেটের চাপে অস্থির হতে থাকে পাকিস্তানি ব্যাটাররা। দ্বিতীয় উইকেটে অবশ্য এরমধ্যেই আসে ৬৪ রান।

পাক অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ ছিলেন বিপদজনক। প্রথম স্পেলে খরুচে জাহানারা আলম তার দ্বিতীয় স্পেলে ফেরান এই বাঁহাতিকে।

৪৮ বলে ৩১ করা বিসমাহর আউটে চাপ বাড়ে পাক দলের। রানের চাপে ফাহিমার লেগ স্পিনে মারতে গিয়ে ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন ওমাইনা সোহাইল।

রুমানার বলে ফেরেন নিদা ধার। আলিয়া রিয়াজ, ফাতিমা সানাকে পর পর তুলে নেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন ফাহিমা। হ্যাটট্রিক না হলেও ওই ওভারে বাংলাদেশ পায় আরেক উইকেট। রান আউটে ফেরেন সিদ্রা নাওয়াজ।

উইকেটের পতনের মাঝে এক প্রান্তে টিকে সেঞ্চুরি করে ফেলেন সিদ্রা আমিন। তিনি শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের মেয়েদের ক্ষিপ্রতায় পেরে উঠেননি।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার ভালোই শুরু এনেছিলেন। তবে এবার শামীমা সুলতানা ফেরেন থিতু হয়ে। ৩০ বলে ১৭ করা শামীমা ক্যাচ দেন নিদা ধারের বলে ৩৭ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটেও জুটির আভাস ছিল।

শারমিন আক্তার সুপ্তার সঙ্গে মিলে ফারজানা হক পিংকি দলকে সামলাচ্ছিলেন। তাদের ৪২ রানের জুটি ভাঙ্গে সুপ্তার বিদায়ে। দারুণ ইতিবাচক ব্যাট করে ৫৫ বলে ৬ চারে ৪৪ করেন সুপ্তা।

এরপর ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি পায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি আর ফারজানা মিলে দলকে নিয়ে যান বড় কিছুর দিকে। তৃতীয় উইকেটে তাদের ১২৪ বলের জুটিতে আসে ৯৬ রান।

দলের দাবি মিটিয়ে মিডল অর্ডারে রান বাড়াচ্ছিলেন নিগার। ফারজানা ছিলেন আটসাটো। তবে সুপ্তার মতো ফিফটি হাতছাড়া করার হতাশায় পুড়েন নিগারও।

৬৪ বলে ৪৬ করা বাংলাদেশ অধিনায়ক ফাতিমা সানার বলে ফেরেন এলবিডব্লিউতে। এরপর স্লগ ওভারে দ্রুত রান আনার চাহিদায় আগ্রাসী হতে থাকেন ব্যাটাররা। এই সময়ে ৬০ রান এলেও পড়েছেন ৫ উইকেট।

রুমানা আহমেদ, রিতু মনিরা থিতু হয়েও বড় করতে পারেননি ইনিংস। ফিফটি পেরিয়ে যাওয়া ফারজানা ৪৭তম ওভারে থামেন ৭১ রান করে। তবে তার সৌজন্যে জেতার মতো পুঁজি হয়ে যায় লাল সবুজের প্রতিনিধিদের।

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!