Newsun24

Most Popular Newsportal

আন্তর্জাতিক

সু চি আটক, মিয়ানমারে ১ বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চি এবং দেশটির রাষ্ট্রপতি উইন মিনতকে আটকের পর দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

একই সঙ্গে তাদের আটকের পর দেশটির বড় শহরগুলোতে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।

রাজধানী নাইপিডো এবং প্রধান শহর ইয়ানগনের রাস্তায় সেনা সদস্যদের টহল দিতে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সংবাদদাতা জনাথান হেড।

বিবিসির বার্মিস সার্ভিস জানিয়েছে, নাইপিডোতে স্থগিত করা হয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট অধিবেশন এবং টেলিফোন, ইন্টারনেট ও টিভি চ্যানেল সম্প্রচারও বন্ধ করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সেনাবাহিনীর অভিযানে সু চি এবং উইন মিনতসহ এনএলডির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে আটক করা হয়েছে।

সৈন্যরা দেশের বিভিন্ন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে তাদের ধরে নিয়ে যায় বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র মায়ো নিউনত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি উইন মিনত এবং অন্য শীর্ষ নেতাদের সোমবার ভোরে আটক করা হয়েছে।

এসময় মায়ো নিউনত জনগণকে উত্তেজিত না হয়ে আইন অনুসারে প্রতিক্রিয়া দেখানোর আহ্বান জানান।

এর আগে গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল এনএলডি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। তবে ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে দেশটির সেনাবাহিনী। এবার সেই অভিযোগেই অভিযান চালিয়ে সু চিসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের আটক করা হলো।

ওই নির্বাচনে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের ভোটারদের ভোট বঞ্চিত করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী থেকে সমালোচনা করা হয়। আর সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরোধী জোট নির্বাচনে দাবি করে নির্বাচনে ৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতারণার’ অভিযোগ নিয়ে মিয়ানমারে যে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান না হলে ‘ব্যবস্থা নেওয়ার’ পরিকল্পনা আছে তাদের।

এটি কি অভ্যুত্থান হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ‘সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না’ বলে মন্তব্য করলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এরপর গত শুক্রবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও মিয়ানমারে অবস্থিত পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে সেনা হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানায়। যদিও পরের দিনই দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে অভ্যুত্থানের আশঙ্কা নাকচ করে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সংবিধান মেনে আইন অনুযায়ী কাজ করবে।

গত বছর ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বড় জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন। সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। দাবি মানা না হলে সেনাবাহিনী ফের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় তারা।

নির্বাচনের পর বেসামরিক সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে নতুন পার্লামেন্টের যাত্রা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিতের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!