অনলাইন ডেস্ক, নিউসান টয়েন্টিফোর ডট কম:
করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবে নৌযান চলাচল সীমিত করায় আয় কমে গেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউসিটি) পরিচালিত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটের।
অন্য সময়ে এই ঘাট থেকে দৈনিক প্রায় ৭০ লাখ টাকা আয় হলেও এখন তিন ভাগের একভাগে নেমে এসেছে।
সংস্থার দুজন কর্মী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছেন অন্যরাও। একই সঙ্গে বেকার হয়ে পড়েছেন ঘাট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাবারের দোকান, হকার ও ফেরিওয়ালারা।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট কাযালয়ের ব্যবস্থাপক মো. আবু আব্দুল্লাহ রনি বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথের শুধু দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকেই দৈনিক গড়ে ৩৩ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হতো।
এখন সেটা কমে দাড়িয়েছে মাত্র ১০ থেকে ১১ লাখ টাকায়। পাটুরিয়া ঘাট থেকেও এ রকম পরিমাণ অর্থ আয় হতো সংস্থাটির।
করোনাভাইরাসের কারণে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে ফেরি চলাচলও সীমিত করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে আমাদের দুজন স্টাফ করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে। এতে সকল স্টাফদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দায়িত্ব পালন করছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোর যোগাযোগের অন্যতম দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌপথের উভয়ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ৬ হাজারের বেশি যানবাহন নদী পারাপার হয়।
এসব যানবাহনের মধ্যে প্রায় ২০০০ পণ্যবাহী ট্রাক, ২০০০ যাত্রীবাহী ও ২০০০ হাজার মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও অন্যান্য ছোট গাড়ি নদী পার হয়। ২৬ মার্চ থেকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটির কারণে এখন যানবাহন পারাপারের পরিমাণ দুইঘাট মিলে দুই হাজারে নেমে এসেছে।
এক মাসে প্রায় ১৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় কম হয়েছে। এই নৌপথে নিয়মিত ১৬টি ফেরিতে যানবাহন পারাপার করা হলেও বর্তমানে দুটি রো রো ও ৩টি ইউটিলিটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। বাকিগুলো বসে রয়েছে।
সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি বেকার হয়ে পড়েছে বিভিন্ন খাবার হোটেলের কর্মচারী, দিনমজুর, হকারসহ ঘাট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরনের কর্মজীবী মানুষ। দৌলতদিয়া ঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাজার। রয়েছে একটি পতিতাপল্লী। প্রতিদিন যেখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটতো। সেখানে এখন সুনসান নীরবতা।
দৌলতদিয়া বাজারের ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম পান্নু মোল্লা বলেন, সাধারণ ছুটির কারণে একমাস ধরে ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। এতে দৈনিক আয়ের মানুষগুলোর জীবনযাপন একটু কষ্ট হচ্ছে। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি আমি এসব মানুষের মাঝে খাবারসামগ্রী বিতরণ করছি। যতদিন করোনাভাইরাসের ছুটি থাকবে ততদিন খাবার বিতরণ করবো।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার আরিচা ইউনিট কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জিল্লুর রহমান বলেন, সাধারণ ছুটির কারণে আমাদের আয় প্রায় ৭০ শতাংশ কমে গেছে। এখন জরইর পণ্যবাহী ট্রাক ও কিছু মাইক্রোবাস পারাপার করা হচ্ছে।