তারা সবাই প্রবাসী। বাড়ি তাদের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নে। বাস করেন আমেরিকা, লন্ডন ও ইতালিতে। অথচ পার্শ্ববর্তী বারুহাস ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় তাদের নাম রয়েছে।
এ চিত্র তুলে ধরে তাড়াশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি আইয়ূবুর রহমান রাজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন বারুহাস ইউনিয়ন থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন সগুনা ইউনিয়ন এর বেশ কয়েকটি প্রবাসী পরিবার। এগুলো দেখে হাসব না কাঁদব?
এর পরপরই ঘটনাটি টক আব দ্য টাউনে পরিণত হয়। শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দরিদ্রদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদে তালিকা খুঁজতে যান সোহেল সরকার নামে এক প্রবাসী। সেখানে তিনি সরকারি ওয়েবসাইটে দেখতে পান, হতদ্ররিদ্র প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় এক থেকে নয়জনের মধ্যে যাদের নাম রয়েছে তারা সবাই তার নানার বাড়ির সদস্য ও পার্শ্ববর্তী সগুনা ইউনিয়নের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন যাবৎ তারা সকলেই ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন। সোহেল সরকার উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের কাজিপুর গ্রামের সাহাদত সরকারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসবাস করছেন।
সোহেল সরকার মুঠোফোনে ফোনে জানান, প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় ১ নম্বর আলহাজ্ব জহিরুল ইসলাম জুয়েল ইতালিতে বসবাস করছেন, ২ নম্বর জাহাঙ্গীর আলম রুবেল আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে বসবাস করেন, ৩ নম্বর জাকারিয়া ইসলাম ও ৪ নম্বর জয়নাল আবেদীন রোজ লন্ডনে বসবাস করেন, ৫ নম্বর জহুরা খাতুন (তার নানি) লন্ডনে বসবাস করেন, ৬ নম্বর কামরুজ্জামান ইতালিতে বসবাস করেন, ৭ নম্বর বিউটি খাতুন লন্ডনে বসবাস করেন, ৮ নম্বর সাথী ও ৯ নম্বর বিদ্যুতের নাম দেওয়া আছে। তার দুজনেও বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন।
বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী ও লন্ডনপ্রবাসী জয়নাল আবেদীন রোজ তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, বারুহাস ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় থাকা ওই ৯ জনই ইউরোপ ও আমেরিকাপ্রবাসী। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করছি।
বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোক্তার হোসেন জানান, প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকা অনেক আগে থেকেই করা। সে ভাবেই রয়ে গেছে। তবে অন্য ইউনিয়নের লোকজনের নাম থাকার কথা না। তার এ কথায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি এলাকাবাসী। তাদের বক্তব্য, মোক্তার হোসেন ওই ইউনিয়নে টানা দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। দীর্ঘ ৯ বছরেও তার দৃষ্টিতে বিষয়টি ধরা পড়েনি- এটা হতে পারে না।
উপজেলা সমাজসেবা কর্তকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ইফ্ফাত জাহান বলেন, এখন তো অফিস বন্ধ। খোলারপর তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।