Newsun24

Most Popular Newsportal

আন্তর্জাতিক করোনা ভাইরাস

করোনা ভীতি থেকে বাংলাদেশে আত্মহত্যার ঝুঁকি: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক, নিউসান টয়েন্টিফোর ডটকম:

নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) কারণে সৃষ্টি হওয়া সামাজিক অসমতার সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কিছু অঞ্চলে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছে নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা বিষয়ক প্রকাশনী সংস্থা এলসিভিয়ারের পিয়ার রিভিউড জার্নাল ‘ব্রেইন, বিহেভিয়ার অ্যান্ড ইমিউনিটি’।

কভিড-১৯ ভীতি থেকে আত্মহত্যার প্রবণতা কীভাবে ঠেকানো যায়, সেটি জানতে এই সংস্থাটি দুটি গবেষণা করেছে। একটিতে গবেষকেরা বাংলাদেশ, ইতালি, ব্রিটেন, জার্মানি, সৌদি আরব এবং ভারতের বিভিন্ন ঘটনার কথা তুলে ধরে এই অঞ্চলের ঝুঁকিগুলো বিবেচনা করেছেন। এরপর ‘ভলিউম ৫১, জুন ২০২০ সংখ্যায়’ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে করোনাকালে বাংলাদেশের প্রথম আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

যেকোনো গবেষণার জন্য পিয়ার রিভিউড (স্কলারলি বা রেফারিড) জার্নাল খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানে বিশেষজ্ঞদের যেসব আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়, তা প্রকাশিত হওয়ার আগে এই বিষয়ের একাধিক বিশেষজ্ঞ (রেফারি হিসেবে যারা কাজ করেন) বার বার পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এই ধরনের জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেলকে ‘সর্বোচ্চ’ মানের ধরা হয়।

ভলিউম ৫১ সংখ্যায় বলা হয়েছে, ‘মানসিক দুর্ভোগ সহ্য করতে না পেরে যে ব্যক্তি জীবন বিসর্জন দেন, তাকে সাধারণত আত্মহত্যা বলা হয়। কভিড-১৯ ভীতি থেকে যে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে, তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।’

বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভেতর কভিড-১৯ সংক্রান্ত ভীতি আছে। তবে এটি কোন পর্যায়ে তা এখনো অজানা।’

বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সূত্র উল্লেখ করে গবেষণায় ২৫ মার্চের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়, ‘৩৬ বছর বয়সী জাহিদুল ইসলাম ঢাকা থেকে রামচন্দ্রপুর গ্রামে ফিরে আত্মহত্যা করেন। কারণ প্রতিবেশীরা তাকে কভিড-১৯ সংক্রমিত সন্দেহ করেন। এরপর সামাজিকভাবে তাকে এড়িয়ে যাওয়া শুরু হলে গাছে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। কিন্তু পরে দেখা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না।’

‘বাংলাদেশ, ভারতের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশে গ্রামে বসবাস করা মানুষেরা শহুরেদের তুলনায় কম শিক্ষিত। যার কারণে তাদের ভেতর কভিড-১৯ ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে। অন্য এলাকা থেকে আসা ব্যক্তিদের নিয়েও অহেতুক ভয় উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। যেটি আত্মহত্যার অন্যতম কারণ।’

একাধিক দেশ নিয়ে যে গবেষণাটি করা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘সামাজিক বয়কট এবং বৈষম্য’কে আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ বলা হয়েছে।

মুক্তির পথ: কভিড-১৯ সংক্রান্ত আত্মহত্যার ঘটনা কমিয়ে আনতে সবার জন্য প্রযোজ্য এমন বেশ কয়েকটি পরামর্শ  দিয়েছেন গবেষকেরা।

১. বিশ্বাসযোগ্য সোর্স ছাড়া কভিড-১৯ সংক্রমণের খবর সীমিত করা।

২. সামাজিক দূরত্ব এবং আইসোলেশনের দিনগুলোতে সামাজিকভাবে যুক্ত থাকার ভিন্ন পথ বের করা।

৩. মানসিক সুস্থতা ঠিক রাখে এবং মন ফুরফুরে রাখে এমন কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা।

৪. ভুক্তভোগী প্রিয়জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা, যাতে তিনি লড়াইয়ের সময়ে নিঃসঙ্গ বোধ না করেন।

৫. বিশেষজ্ঞদের দিয়ে টেলি-কাউন্সেলিং বাড়ানো। চিকিৎসকদের বেশি বেশি রোগীদের সঙ্গে কথা বলা।

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!