Newsun24

Most Popular Newsportal

জাতীয়

মানুষকে বাঁচানোটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক, নিউসান টয়েন্টিফোর ডট কম:

সোমবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এই আহ্বান জানান সরকার প্রধান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের সবাইকে এখন এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের যারা এই করোনাভাইরাস মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছে, দিন-রাত পরিশ্রম করছে, তাদেরকেও আপনাদের সহযোগিতা করতে হবে। সবাই মিলেই আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাব ইনশা-আল্লাহ।”

শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রমের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “মানুষের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন তিনি। কাজেই সেই মানুষকে বাঁচানোটা আমাদের জন্য অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে উল্লেখ করে ফসল উৎপাদনের উপর গুরুত্ব দেন তিনি।

“আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর। আমাদের যেন খাদ্যের অসুবিধা না হয়, কাজেই যেখানে যেই ফসলটা হওয়ানো যাবে..যেমন ধান কাটার পরপরই আমরা কোন কোন ফসল ফলাতে পারি…এক খণ্ড জমিও যেন অনাবাদী না থাকে।”

সঙ্কটময় এ সময়ে কৃষি সচল রাখতে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা আলাদা ৫ হাজার কোটি টাকার একটা তহবিল গঠন করে দিয়েছি, যাতে কৃষিকাজটা অব্যাহত থাকতে পারে।”

ক্ষুদ্র, মাঝারি চাষী, কৃষিতে যারা সরাসরি কাজ করে, ডেইরি ফার্ম, মৎস্য খামার,পোল্ট্রি ফার্ম যাদের আছে প্রত্যেকেই এখান থেকে সহযোগিতা পাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “সকলেই কিন্তু এখান থেকে অর্থ নিয়ে কাজ করতে পারবেন। এখানে আমরা প্রায় ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বোরো ধান উঠার সাথে সাথে আমরা ধান ক্রয় করব। ইতোমধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান, ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আতপ এবং ৮০ হাজার মেট্রিক টন গমসহ ২১ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য সংগ্রহ করার পরিকল্পনা নিয়েছি।”

করোনাভাইরাসে সব কিছু বন্ধ থাকলেও যারা ধান কাটবেন তারা যেন গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে বলে জানান তিনি।

“আস্তে আস্তে আমরা চেষ্টা করব। আপনারা যদি নিজেদের সুরক্ষিত রেখে এই সংক্রমণের হার কমাতে পারেন, মৃত্যুর হার…গতকালকে ৫ জন মারা গেছেন, কিন্তু আজকে মৃত্যুর হারও কমুক।”

জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে পণ্য পবিহনের ব্যাপারে কোনো বাধা নেই উল্লেখ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেওয়া নির্দেশনার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

“পণ্য পবিহনের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হবে এবং আরও কিভাবে আমরা সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে পারি…কারণ যাতায়াত করতে গেলে তো ট্রাক লাগে অথবা ভ্যান লাগে বা অন্য কিভাবে আমরা বা নৌপথে পণ্য পবিহন করা, সেই সুযোগটা আমরা সৃষ্টি করে দেব পর্যায়ক্রমিকভবে, যাতে পণ্য পরিবহনে অসুবিধা না হয়। তাহলেই জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে।”

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অন্য জেলার লোকদের প্রবেশ রুখতে জেলা প্রশাসনকে কঠোর হওয়ারও নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

ভিডিও কনফারেন্সে পাবনা জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময়, জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন, “আমাদের পাবনা জেলায় দুই-জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। সেটাও ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা। যারা এই জেলার বাইরে থেকে এসেছে বিশেষ করে ঢাকা ও নারায়গঞ্জ থেকে, তাদেরকে আমরা কোয়ারেন্টিনে নিয়েছি। কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, ফলে এর বিস্তার এখনও নিয়ন্ত্রণে আছে।”

এ সময় প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, “এ সমস্ত জেলা থেকে যাতে ঢুকতে না পারে সেই ব্যপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।”.

ধান সংরক্ষণ ও চাল প্রস্তুতে সব ধরনের সহযোগিতা করার জন্যও জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় জেলা প্রশাসক জেড এম নূরুল হক বলেন, “কৃষি নির্ভর চাঁপাইয়ে ধান সংরক্ষণ ও চাল প্রস্তুতকরণে কৃষকদের সহায়তা করছি।”

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কৃষি পণ্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে খাদ্য ঘাটতি হবে না। কৃষক যাতে যথাযথভাবে ধান সংরক্ষণ করতে পারে, ধান কাটা, ধান পরিবহন করে চাল প্রস্তুতকরণ, এর জন্য পরিবহন সুবিধা- এই চেইন যেন সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, সেটা আপনারা খেয়াল রাখবেন।”

বগুড়া জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ওয়ার্ড ইউনিয়ন পর্যন্ত যারা গরীব, যারা হাত পাততে পারে না, তাদের তালিকা তৈরি করুন। যা কিছু অর্জন, এটা সকলের, দুঃসময়ে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।”

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!